Article's
চ্যানেল আওয়ামীলীগ
- Get link
- Other Apps
গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। শক্তির দিক দিয়ে মিডিয়া পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী। অ্যাটম বোমা একটি জনপদকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু মিডিয়া একটি জনপদের গণমানুষের মননে পরিবর্তন এনে একটি সভ্যতার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। পুরাতন সভ্যতাকে ভেঙে সেখানে গড়ে তুলতে পারে নতুন সভ্যতা।
বাংলাদেশের টেলিভিশন গণমাধ্যম, একটি দল ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষিগত। জ্বালানী, আবাসন খাত ও অন্যান্য বাণিজ্যিক স্বার্থের হাতে যখন গণমাধ্যমের সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তখন তার ফলাফল কী দাঁড়ায়?
সেসব কোম্পানিগুলো মিডিয়ার বাইরেও বিশাল বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এদের মালিকানা বিভিন্ন বৃহৎ কর্পোরেশনের হাতে, যাদের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিস্তৃত আধিপত্য রয়েছে। অনেক সংবাদের বিষয় বস্তুই বিভিন্ন বাণিজ্যিক খাতের সাথে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে যুক্ত।
এসব বাণিজ্যিক খাতে টিভির মালিকানাধীন কর্পোরেশন গুলোর অর্থনৈতিক স্বার্থ স্পষ্টভাবে জড়িত। এক্ষেত্রে চ্যানেলগুলো কিভাবে স্বাধীনভাবে সেসব সংবাদ উপস্থাপন করতে পারেনা এই প্রশ্ন স্বাভাবিক কারণেই চলে আসে।
তার অন্যতম কারন, বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর প্রায় এক তৃতীয়াংশের সম্পূর্ণ বা আংশিক মালিকানা আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের।
ফলে সাংবাদিকতা ভয়াবহভাবে কম্প্রোমাইজড হয়৷ সরকারি দলের লোকেরাই ব্যবসা করছেন, তারাই বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন৷ তার মানে মালিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ তিন এক হয়ে গেছে৷ ফলে এর মধ্যে পড়ে স্বাধীন সাংবাদিকতাটা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে৷
টিভি মালিকানা নিজের লোকদের হাতে থাকলে কি প্রকাশ পাবে, কি পাবেনা তা নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। বাংলাদেশে টিভি সাংবাদিকতায় সরকার ও ক্ষমতাশালীদের তোয়াজ করে চলার যে প্রবণতা, তার কারণ জানতে হলে আপনাকে শুধু এই টিভি মালিক কারা তা দেখলেই চলবে।
সরকারের চাপে সাংবাদিকতায় যে তীব্র বাঁধা সৃষ্টি হয় তার গুরুত্ব ছোট না করেই বলা যায় যে একই রকম নিয়ন্ত্রণ এবং সাংবাদিকতার স্বাভাবিক কাজের অবরোধ ঘটে বাংলাদেশে গণমাধ্যমগুলোর কর্পোরেট মালিকানার ফলে, মালিক যে দলই করুক। এমনকি দল না করলেও একথা খাটে। কিন্তু এই সেন্সরশিপ নিয়ে খুব একটা কথা হয় না।
সাংবাদিকেরা নিজেদের কথা আর নিজেরা বলতে পারছেন না !
মালিকপক্ষ সাংবাদিকদের উপর সেন্সরশিপ আরোপ করেন৷ বিশেষ করে সাংবাদিক নেতারা যারা আছেন, সংবাদপত্রের মালিকানায় যারা আছেন তারা ব্যবসাও করছেন আবার সরকার দলীয় রাজনীতিও করছেন৷ তারা একেবারেই কোন কথা বলেন না৷ ফলে বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা খুবই সংকটের মুখে৷ একদিকে কর্পোরেট হাউজের দৌরাত্ম্য আরেকদিকে আইনের ফাঁদে পড়া, এই দুটো মিলে যেটা হয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই৷ আর এর জন্য সাফার করছেন সাংবাদিকেরা৷
এই সাংবাদিকতাকে নিয়ন্ত্রিত সাংবাদিকতা বলাই যায়৷ এখানে আমরা কোনো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা দেখি না৷ সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে কথা বার্তা খুব একটা বলা হয় না৷ যখন কোনো মন্ত্রীর কোন বিষয় সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় তার অনেক পরে মেইনস্ট্রিমের সাংবাদিকেরা দু'একটা কথা বলে বটে, কিন্তু এটা ঠিক সাংবাদিকতা বলে আমরা জানি না৷ ফলে আমার কাছে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ভবিষ্যত খুবই অনিশ্চিত৷
সরকারি মালিকানাধীন বিটিভি বাদে দেশে এই মুহূর্তে ৪৪ টির মত চলমান টিভি চ্যানেল রয়েছে। বাংলাদেশে টিভি চ্যানেলের অনাপত্তি সনদ এবং সম্প্রচারের লাইসেন্স দেয়া হয় রাজনৈতিক বিবেচনার ভিত্তিতে - যে দলই ক্ষমতায় থাকুক, ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব বা কাছের লোকেরাই এই অনুমোদন পেয়ে থাকে। এখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার সেন্সরশীপ থাকাটাই স্বাভাবিক।
গত ১২ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাই যে এখন গণমাধ্যমের এক বড় অংশের মালিক তা সহজেই দৃশ্যমান হয়েছে। এসবের মালিক হচ্ছে ৩২টি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। এসব গণমাধ্যমের পরিচালকদের এক বড় অংশই হচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা; অর্থাৎ একই পরিবারের সদস্যরা একই গণমাধ্যমের পরিচালক বোর্ডের সদস্য; মালিকানার এক বৃত্তচক্র।
অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া, কনগ্লমোরেটগুলো সাংবাদিকতায় আগ্রহের কারণে টিভি এবং সংবাদপত্রের পেছনে টাকা ঢালে না।
স্বাধীন সাংবাদিকতাকে সুযোগ দেবার জন্য তো নয়ই।
এখান থেকে টিভি মালিকদের কোন টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যও থাকেনা। তারা সংবাদমাধ্যম তৈরি করে তাদের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সুবিধা তৈরির উদ্দেশ্যে, এবং সর্বোপরি তাদের বিশাল ব্যবসার স্বার্থকে আরো সুরক্ষিত করতে।
সমস্যার সমাধান ও ভবিষ্যৎ:
স্বাধীন সাংবাদিকতার সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে, গণমাধ্যমের মালিকানা এবং পরিচালনা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। কর্পোরেট এবং রাজনৈতিক স্বার্থের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হলে:
- Get link
- Other Apps
Comments
Post a Comment