Tuhin Article's

Tuhin Sarwar | Investigative Journalist, Author & Media Strategist. Founder – The Today

Image
Image: Tuhin sarwar Journalist  Tuhin sarwar Investigative Journalist | Author | Digital Media Strategist Founder – The Today Media Agency & Article Insight ━━━━━ THE OBSERVER| MEDIUM | The Diplomat | The Wire | ARTICLR INSIGHT ━━━ CORE EXPERTISE: • Investigative Journalism • Rohingya Refugee Crisis & Statelessness • Human Rights & Social Justice Reporting • Data Journalism & Evidence-Based Narratives • Startup Ecosystem & VC Trends in Bangladesh • Media Innovation & Strategic Communication • Civic Storytelling & Freedom of Expression ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ 📊 IMPACT IN NUMBERS: ✓ 10+ Years of Journalistic Experience ✓ 50+ In-depth Investigative Features Published ✓ 15,000+ Engaged Readers on Social Platforms ✓ 2,500+ Substack Subscribers ✓ 8+ International Media Features ✓ Trained 100+ Young Journalists ━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━ 🎓 MENTORSHIP & LEADERSHIP: Trained 100+ aspiring journalists throu...

অনলাইন জুয়া ফাঁদে পড়ে পথ হারাচ্ছেন বাংলাদেশের তরুন প্রজন্ম

তহিন সারোয়ার, ঢাকা। 


পাঁচ-দশ হাজার টাকা বিনিয়োগে দিয়ে শুরু করেন। এক পর্যায়ে লোভে পড়ে হারাচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। জুয়ায় বিনিয়োগের এই কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে। জুয়ার এসব সাইটের অধিকাংশই পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে। বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইট পরিচালনায় রয়েছে বাংলাদেশী এজেন্ট।


জুয়ায় আর্থিক লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়- রাশিয়া থেকে পরিচালিত জুয়ার সাইট বেটউইনার ও ওয়ানএক্সবেট-সহ একাধিক সাইটে বাংলাদেশিদের লেনদেনের জন্য নির্বিঘ্নে ব্যবহৃত হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, নগদ, রকেট। এছাড়া অনেক ব্যাংকের মাধ্যমেও জুয়ায় বিনিয়োগ অবারিত রাখা হয়েছে। ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করার সুযোগ রেখে জুয়ার অ্যাপস গুলোতে।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ডিসেম্বর ২০২২ শেষে দেশে এমএফএস এ মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৪১ লাখে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়, এমক্যাশ, মাইক্যাশ, ট্যাপ-সহ মোট ১৩টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৮৫২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করেছে। আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে শুধুমাত্র গত মার্চ মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। এই হারে লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে অনলাইন জুয়ার কথা বলছেন অনেকে।


জুয়া খেলা বেশি করে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে বাংলায়। অনলাইন ক্যাসিনোর অ্যাপস ইন্সটলের জন্যও দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অফার। এমনকি বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেলেব্রিটির ছবিও দেখা যাচ্ছে।


অনুসন্ধানে জানা যায়, সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই অনলাইন ক্যাসিনো। তবে এসব ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কোন তদারকি নেই। বিটিআরসিও নির্বিকার। এসব অ্যাপসের নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সক্ষমতার অভাব রয়েছে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের। তারা বলছে, বিদেশ থেকে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালিত হওয়ায় এগুলো ঠেকানো সহজ নয়।


১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে অনলাইনে জুয়া খেলার ১৭৬টি সাইট বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এসব ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ২০২২ সালে এসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশে অনলাইনে জুয়া খেলার প্রবণতা বাড়ছে জানিয়ে তা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।


অনলাইন ক্যাসিনো দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত হলেও সমন্বয়ের জন্য দেশীয় সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ফেসবুক গ্রুপ বা পেজ খুলে প্রচার চালানো হচ্ছে।


ভারত, রাশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে অনলাইনে পরিচালিত জুয়ার আসরে যুক্ত ছিল বাংলাদেশের একটি চক্র। এ চক্রের মাধ্যমে দেশে বসে ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলছেন অনেকেই। এ সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র বিভিন্ন ভার্চুয়াল কারেন্সি এবং পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে থাকেন। চক্রটি মূলত মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের লেনদেন (ই-ট্রানজেকশন) করে থাকেন।


মূলত টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ, আইপিএল, বিগব্যাশ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও বিভিন্ন ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলোতে চলে অনলাইনে জুয়ার আসর। জুয়া খেলার জন্য একজন জুয়াড়ি মোবাইল নাম্বর বা ইমেইলের মাধ্যমে বেটিং সাইট বা অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলেন। ওই অ্যাকাউন্টের বিপরীতে একটি ই-ওয়ালেট তৈরি করে ব্যালেন্স যোগ করা হয়। জুয়ার নামে এভাবে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই জুয়া দেশের গ্রাম অঞ্চলে অল্পশিক্ষিত থেকে শুরু করে অর্ধশিক্ষিত মানুষ খেলছেন। অনলাইন জুয়া একটা নেশার মতো, এখানে একবার ঢুকলে নিঃস্ব হওয়া ছাড়া উপায় নেই। অংশগ্রহণকারীরা নিঃস্ব হওয়ায় পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে, আইনশৃঙ্খলার ওপর প্রভাব পড়ছে।


বর্তমান বাংলাদেশে অনলাইন জুয়া মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। এটি এখন গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। মোবাইল ও টেকনোলজির সহজলভ্যতায় মানুষ খুব সহজেই জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এর পেছনে দুটি চক্র জড়িত। একটি জুয়ার এজেন্ট, অন্যটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের এজেন্ট। এজেন্ট ছাড়া কেউ জুয়া খেলতে পারে না। অর্থাৎ, টাকা লেনদেন সম্ভব নয়। টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে যদি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট নম্বর ব্যবহার না হয় তাহলে অনেকাংশে অনলাইন জুয়া বন্ধ হয়ে যাবে।


একটি জুয়ার সাইট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, একসঙ্গে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি জুয়া খেলছে। এর মধ্যে একজন জুয়া খেলে প্রায় এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা খুইয়েছেন। এক লাখের মধ্যে যদি ১০ শতাংশ মানুষের ১০ হাজার টাকা করে খোয়া যায় তাহলে কী পরিমাণ টাকা চলে যাচ্ছে তা উদ্বেগের বিষয়। প্রতিদিন প্রায় ৩শ’র বেশি সাইটে অনলাইন জুয়া খেলা হয়। এর মধ্যে বেশকিছু সাইট বিটিআরসি বন্ধ করেছে।


ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম একটি বিশাল জায়গা। যারা অবৈধ লেনদেনের ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের চেষ্টা করেন তাদের ধরার জন্য ২৪ ঘণ্টা একটা টিমকে কাজে লাগাতে হবে। জুয়া খেলার সাইটগুলোতে ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের বদলে এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে।


দেশ থেকে অনলাইন নামক জুয়ার কালো থাবা দূর করতে সামাজিকভাবে সবাইকে সংঘবদ্ধ হতে হবে। জুয়ার নেতিবাচকতা সবার সামনে তুলে ধরতে হবে। কিভাবে স্মার্টফোন ইতিবাচকভাবে ব্যাবহার করা যায় এটা শিক্ষার্থীসহ সবাইকে বুঝাতে হবে। পরিবারে যারা অভিভাবক আছে তাদের নীতিগতভাবে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে।


অনলাইন জুয়ার নেতিবাচকতা সম্পর্কে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেমিনারের আয়োজন করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোনে শিক্ষামূলক বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করা শেখানো এবং স্মার্টফোনকে একটি শিক্ষামূলক যন্ত্র ভাবতে শেখাতে হবে। সরকারিভাবে বিভিন্ন বিদেশি জুয়ার এপ্লিকেশন অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।


অতিদ্রুত এই অনলাইন জুয়া নামক বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটন না করলে এর শাখা-প্রশাখা গজিয়ে স্থায়ী রূপ লাভ করবে। সরকারের এই বিষয়ে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ।



Comments

Popular posts from this blog

International Journalists from Bangladesh

Publishing an app on Google Play involves several steps

চ্যানেল আওয়ামীলীগ